হিমুর রূপালী রাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ
হিমু সিরিজের বইগুলোর মধ্যে হিমুর রূপালী রাত্রি বইটি ৮ম। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ-এর সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্যে হিমু অন্যতম। হিমু সিরিজের প্রথম বই হলো ময়ূরাক্ষী (১৯৯০)। প্রাথমিক সাফল্যের পর হিমু চরিত্র বিচ্ছিন্নভাবে হুমায়ুন আহমেদের বিভিন্ন উপন্যাসে প্রকাশিত হতে থাকে। হিমুর রূপালী রাত্রি বইটি ১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়। জ্ঞানকোষ প্রকাশনী থেকে বইটি বের হয়। বইটি ডাউনলোড করতে অথবা অনলাইনে পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।
❤️
Himur Rupali Ratri Ukti
বইয়ের কিছু অংশ
ফাতেমা খালা একটা চিরকুট পাঠিয়েছেন। চিরকুটে লেখা—
হিমু,
এক্ষুনি চলে আয়, ম্যানেজারকে পাঠালাম। খবৰ্দার দেরি করবি না।
খুবই জরুরী। Very urgent.
ইতি
ফাতেমা খালা।
ম্যানেজার ভদ্রলোক গম্ভীর মুখে বসে আছেন। তার গায়ে স্যুট। পায়ে কালো রঙের জুতা। মনে হয় আসার আগে পালিশ করিয়ে এনেছেন। জুতা জোড়া আয়নার মত চকচক করছে। গলায় সবুজ রঙের টাই। বেশির ভাগ মানুষকেই টাই মানায় না। ইনাকে মানিয়েছে। মনে হচ্ছে ইনার গলাটা তৈরিই হয়েছে টাই পরার জন্যে। ভদ্রলোক আফটার শেভ লোশন, কিংবা সেন্ট মেখেছেন। মিষ্টি গন্ধ আসছে। তার চেহারাও সুন্দর। ভরাট মুখ। ঝকঝকে শাদা দাঁত। বিদেশী টুথপেষ্টের বিজ্ঞাপনে এই দাঁত ব্যবহার করা যেতে পারে। ভদ্রলোককে ফাতেমা খালার ম্যানেজার বলে মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোন মান্টিন্যাশনাল কোম্পানির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। বোঝাই যাচ্ছে, আমার ঘরটা তাঁর খুবই অপছন্দ হচ্ছে। তিনি সম্ভবত কোন বিকট দুৰ্গন্ধ পাচ্ছেন। কারণ কিছুক্ষণ পরপরই চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলে নিঃশ্বাস টানছেন। পকেটে হাত দিচ্ছেন, সম্ভবত রুমালের খোঁজে। তবে ভদ্রতার খাতিরে রুমাল দিয়ে নাকচাপা দিচ্ছেন না। এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন। সম্ভবত দুৰ্গন্ধ কোথেকে আসছে তা বের করার চেষ্টা।
ভদ্রলোক অস্থির গলায় বললেন, বসে আছেন কেন? চলুন, দেরি হয়ে যাচ্ছে।
আমি হাই তুলতে তুলতে বললাম, কোথায় চলব?
গাড়ি নিয়ে এসেছি।
দেরি হবে। হাত-মুখ ধোবা, চা-নাশতা করব।
চা-নাশতা ম্যাডামের বাসায় করবেন। চট করে মুখটা শুধু ধুয়ে নিন।
মুখ ধুতেও দেরি হবে। ঘন্টা দুই লাগবে।
আমি আবারো হাই তুলতে তুলতে (এবারের হাইটা নকল হাই) বললাম, বেশিও লগতে পারে। আমাদের এই মেসে একটা মোটে বাথরুম। ত্ৰিশজন বোর্ডার। ত্ৰিশজন বোর্ডারের সঙ্গে সব সময় থাকে গোটা দশেক আত্মীয়, কিছু দেশের বাড়ির মানুষ। সব মিলিয়ে গড়ে চল্লিশজন। এই চল্লিশজনের সঙ্গে আমাকে লাইনে দাঁড়াতে হবে। সকালবেলার দিকে লম্বা লাইন হয়।
দুঘন্টা অপেক্ষা করা সম্ভব না। আপনি গাড়িতে উঠুন। হাত-মুখ আপনার খালার বাড়িতে ধুবেন। সেখানকার ব্যবস্থা অনেক ভাল।
ভদ্রলোকের গলায় এখন হুকুমের সুর বের হচ্ছে। স্যুট-টাই পরা মানুষ অবশ্যি নরম স্বরে কথা বলতে পারে না। আপনাতেই তাদের গলার স্বরে একটা ধমকের ভাব চলে আসে। অবশ্যি স্যুট পরা মানুষ মিনমিন করে কথা বললে শুনতেও ভাল লাগে না। তাদেরকে ঘরজামাই মনে হয়। শ্বশুরবাড়ির সুটে পার্সোনিলিটি আসে না। একি এখনো বসে আছেন? বললাম না, চলুন।
আমি চৌকি থেকে নামতে নামতে বললাম, আজ কি বার?
মঙ্গলবার।
আমি আবারো ধাপ করে চৌকিতে বসে পড়লাম। চিন্তিত ভঙ্গিতে বললাম, মঙ্গলবার যদি হয়, তাহলে যাওয়া যাবে না। মঙ্গলবার যাত্রা নাস্তি।
যাবেন না?
জ্বি না। আপনি বরং বুধবারে আসুন।
বুধবারে আসব?
জ্বি। খনার বচনে আছে — বুধের ঘাড়ে দিয়ে পা, যথা ইচ্ছা তথা যা।
ম্যানেজার চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছেন। মনে হচ্ছে খনার বচন শোনা তাঁর অভ্যাস নেই। তিনি মনে হয় খানিকটা রেগেও যাচ্ছেন। চোখ ছোট ছোট হয়ে গেছে। রাগলে মানুষের চোখ ছোট হয়ে যায়। আনন্দিত মানুষের চোখ হয় বড় বড়।
হিমু সাহেব।
জ্বি।
আপনাকে যেতেই হবে। ম্যাডাম আমাকে পাঠিয়েছেন, আপনাকে নিয়ে তে। আমি না নিয়ে যাব না। আপনি লাইনে দাঁড়িয়ে হাত-মুখ ধোন, চা-নাশতা খান, ইচ্ছে করলে আরো খানিকক্ষণ গড়াগড়ি করুন। আমি বসছি। দুঘন্টা কেন দরকার হলে সাত ঘন্টা বসে থাকব। কিছু মনে করবেন না, নাশত কি নিজেই বানাবেন?
জ্বি না। ছক্কু দিয়ে যাবে।
ছক্কুটা কে?
ছক্কু নাশতা কখন দিয়ে যাবে? হাত-মুখ ধুয়ে এসে উত্তর দিকের এই জানালাটা খুলে দেব। এটাই হল আমার সিগন্যােল। বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্ট থেকে আমার ঘরের জানালা দেখা যায়। ছক্কু আমার ঘরের জানোলা খোলা দেখে বুঝবে আমি হাত-মুখ ধুয়ে ফেলেছি। সে নাশতা নিয়ে চলে অ্যাসবে। পরোটা-ভাজি।
কিছু মনে করবেন না, আমি এখনই জানালাটা খুলে দি। আপনার হয়ে সিগন্যাল দিয়ে দি। নাশতা চলে আসুক। নয়ত নাশতার জন্যে আবার এক ঘন্টা বসতে হবে।
আগেভাগে জানালা খোলা ঠিক হবে না। আমার ঘরটা নর্দমার পাশে তো— বিকট গন্ধ আসবে। আপনি নতুন মানুষ। আপনার অসুবিধা হবে। শুধু রুমালে কাজ হবে না। গ্যাস মাস্ক পরতে হবে।
ভদ্রলোক বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। কিছু কিছু মানুষ আছে — সহজে বিস্মিত হয় না। তারা যখন বিস্মিত হয় তখন দেখতে ভাল লাগে। এই ভদ্রলোক মনে হচ্ছে সেই দলের। তার বিস্মিত দৃষ্টি দেখতে ভাল লাগছে। তাকে আরো খানিকটা ভড়কে দিলে কেমন হয়?
ম্যানেজার সাহেব! আপনার নাম কি?
রকিব রকিবুল ইসলাম।
আপনি ভাল আছেন?
রকিবুল ইসলাম জবাব দিলেন না। সরু চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তিনি বোধহয় তাঁর শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে চান না।
ফাতেমা খালার ম্যানেজারী কতদিন হল করছেন?
বেশিদিন না, দুমাস।
খালার অবস্থা কি? তার মাথা কি পুরোপুরি আউলা হয়ে গেছে— না এখনো কিছু বাকি আছে?
কি বলছেন। আপনি, মাথা আউলা হবে কেন?
গুপ্তধন পেলে মানুষের মাথা আউলা হয়। খালা গুপ্তধন পেয়েছেন। গুপ্তধন এখনো আছে, না খরচ করে ফেলেছেন?
ম্যানেজার গম্ভীর ভঙ্গিতে বললেন, ম্যাডাম সম্পর্কে আপনার সঙ্গে কোন আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না। উনি আপনার খালা। উনার সম্পর্কে আপনি যা ইচ্ছা বলতে পারেন। আমি পারি না। আমি তার এমপ্লয়ী। আমার অনেক দায়িত্বের একটি হল তার সম্মান রক্ষা করা। হিমু সাহেব, আপনি অপ্রয়োজনীয় কথা বলে সময় নষ্ট করছেন। আপনি বরং দয়া করে বাথরুমের লাইনে দাঁড়ান। উত্তরের জানালা খোলার দরকার নেই। আমি বিসমিল্লাহ রেক্টরেন্টে গিয়ে ছক্কুকে নাশতা দিতে বলে আসছি।
ধন্যবাদ?
আর আপনি যদি চান, আমি আপনার হয়ে লাইনেও দাঁড়াতে পারি।
এই বুদ্ধিটা খারাপ না। আপনি বরং লাইনে দাঁড়ান। আমি চট করে রেস্টুরেন্ট থেকে এক কাপ চা খেয়ে আসি। কোষ্ঠ পরিষ্কারের জন্যে খালি পেটে চায়ের কোন তুলনা নেই। কড়া এক কাপ চা। চায়ের সঙ্গে একটা আজিজ বিড়ি। ডাইরেক্ট একশান। কোষ্ঠের জগতে তোলপাড়। কোষ্ঠ মানে কি জানেন তো? কোষ্ঠ মানে হচ্ছে গু। কোষ্ঠ কাঠিন্য মানে কঠিন গু।
রকিবুল ইসলাম আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। এরকম কঠিন চোখে অনেক দিন কেউ আমার দিকে তাকায়নি।
দোতলায় নেমে এলাম। মেসের কেয়ার টেকার হাবীব সাহেব (আড়ালে ডাকা হয় হাবা সাহেব। যদিও তিনি মোটেই হাবা না। চালাকের চূড়ান্ত। সুগার কুটেট কুইনাইনের মত হাবা কেটেট বুদ্ধিমান। বললেন, হিমু ভাই, আজকের কাগজ পড়েছেন?
আমি বললাম, না।
ভয়াবহ ব্যাপার। আবার একটা ন’বছরের মেয়ে রেপড হয়েছে। একটু দাঁড়ান, পড়ে শোনাই।
এখন শুনতে পারব না। আপনি ভাল করে পড়ে রাখুন। — পরে শুনে নেব।
মেয়েটার নাম মিতু। যাত্রাবাড়িতে বাসা। বাবা রিকশা চালায়।
ও আচ্ছা।
আমি একটা ফাইলের মত করছি। সব রেপের নিউজ কাটিং জমা করে রাখছি।
ভাল করছেন।
হাবা সাহেবের হাত থেকে সহজে উদ্ধার পাওয়া যায় না। ভাগ্য ভাল তাঁর হাত থেকে আজ সহজেই ছাড়া পাওয়া গেল। ভাগ্য একবার ভাল হওয়া শুরু হলে ভালটা। চলতেই থাকে। অতি সহজে বাথরুমেও ঢুকে পড়তে পারলাম। মনের আনন্দে দু লাইন গানও গাইলাম —
জীবনের পরম লগ্ন করো না হেলা
হে গরবিনী।
রবীন্দ্রনাথ কি কোনদিন ভেবেছিলেন তার গান সবচে বেশি গীত হবে বাথরুমে! এমন কোন বাঙালি কি আছে যে বাথরুমে ঢুকে দু লাইন গুণগুণ করেনি!
বাথরুমকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। জগতের মহত্তম চিন্তাগুলি করা হয়। বাথরুমে। আমি অবশ্যি এই মুহুর্তে তেমন কোন মহৎ চিন্তা করছি না। ফাতেমা খালার কথা ভাবছি–হঠাৎ খোঁজ করছেন, ব্যাপারটা কি?
ফাতেমা খালার বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। তিনি বেশ সহজ স্বাভাবিক মহিলাই ছিলেন। জর্দা দিয়ে পান খেতেন। আগ্রহ নিয়ে টিভির নাটক, ছায়াছন্দ এবং বাংলা সিনেমা দেখতেন। ম্যাগাজিন পড়তেন (তাঁর ম্যাগাজিন পড়া বেশ অদ্ভুত। মাঝখানের পৃষ্ঠা খুলবেন। সেখান থেকে পড়া শুরু হবে। খালা দুটা ভিডিও ক্লাবের মেম্বার ছিলেন। ক্লাব থেকে লেটেস্ট সব হিন্দী ছবি নিয়ে আসতেন। তাঁর ঘরের দুজন কাজের মেয়েকে নিয়ে রাত জেগে হিন্দী ছবি দেখতেন। কঠিন কঠিন হিন্দী ডায়ালগ ওদের বুঝিয়ে দিতেন। অমিতাভ বচ্চন কেন দিলীপ কুমারের চেয়ে বড় অভিনেতা— এই ধরনের উচ্চতর গবেষণা ওদের নিয়ে করতেন এবং ওদের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন।
তাঁর একটা অটোগ্রাফের খাতাও ছিল। বাইরে বেরুলেই সেই খাতা তাঁর সঙ্গে থাকত। যে কোন সময় বিখ্যাত কোন ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে। খাতা সঙ্গে না থাকলে সমস্যা। নিউ মার্কেটে একদিন রুটি কিনতে গিয়ে আসাদুজ্জামান নূর সাহেবের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। তিনি ফাতেমা খালাকে অটোগ্রাফ দিলেন। —
জয় হোক
আসাদুজ্জামান নূর।
আরেকবার এলিফ্যান্ট রোডে দেখা হল চিত্রনায়িকা মৌসুমীর সঙ্গে। মৌসুমী ম্যাডাম বোরকা পরে ছিলেন। তারপরেও ফাতেমা খালা তাকে চিনে ফেললেন। মৌসুমী ম্যাডামও অটোগ্রাফ দিয়েছেন–
মানুষ হও
মৌসুমী।
খালার জীবন মোটামুটি সুখেই কেটে যাচ্ছিল। সমস্যা বাধালেন খালু সাহেব। তিনি ফট করে একদিন মরে গেলেন।
ফাতেমা খেলার জীবন্ধারায় বিরাট পরিবর্তন হল। তিনি পুরোপুরি দিশাহারা হয়ে গেলেন। খালাকে দোষ দেয়া যায় না। যে কোন মানুষই দিশাহারা হত। কারণ ছোট খালুর মৃত্যুর পর দেখা গেল। এই ভদ্রলোক কয়েক কোটি টাকা নানানভাবে রেখে গেছেন। ফাতেমা খালার মত ভয়াবহ খরুচে মহিলার পক্ষেও এক জীবনে এত টাকা খরচ করার কোন উপায় নেই।
ছোট খালু মোহাম্মদ শফিকুল আমিন বিচিত্র মানুষ ছিলেন। ভদ্রলোককে দেখেই মনে হত মাথা নিচু করে বসে থাকা ছাড়া তিনি কোন কাজ করেন না। বসে থাকা ছাড়া তিনি আর যা করেন তা হচ্ছে গায়ের চাদর দিয়ে চশমার কাচ পরিষ্কার। শীত এবং গ্রীষ্ম দুই সিজনেই তিনি গায়ে চাদর পরতেন সম্ভবত চশমার কাচ পরিষ্কারে সুবিধার জন্যে। মোহাম্মদ মুকাদেস মিয়াকে দেখে কে বলবে তার নানান দিকে নানান ব্যবসা –ব্রিক ফিল্ড, স্পিনিং মিলের শেয়ার, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট, গারমেন্টসের ব্যবসা, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা।
ব্যবসায়ী মানুষ মাত্রই উদ্বেগের ভেতর বাস করে। ঘুমের অষুধ খেয়ে রাতে ঘুমায়। পীর-ফকিরের কাছে যাতায়াত করে। হাতে রংবেরং-এর পাথরওয়ালা আংটি পরে। অল্প বয়েসেই তাদের ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ, হাই ব্লাড প্রেসার হয়। সবচে বেশি যা হয় তার নাম গ্যাস। ব্যবসায়ী মাত্রেরই পেট ভর্তি থাকে গ্যাস। মাঝারি টাইপের। যে কোন ব্যবসায়ীর পেটের গ্যাস দিয়ে দুই বার্নারের একটা গ্যাস চুলা অনায়াসে কয়েক ঘন্টা জ্বালানো যায়। একমাত্র ছোট খালুকে দেখলাম গ্যাস ছাড়া। পেটে গ্যাস নেই, ব্যবসা নিয়ে কোন উদ্বেগও নেই। তাকে বেশির ভাগ সময়ই দেখেছি জবুথবু হয়ে বসে থাকতে। আগবাড়িয়ে কারো সঙ্গে কথাও বলতেন না। তার সঙ্গে আমার শেষ দেখা এক বিয়েবাড়িতে। বিয়েবাড়ির হৈচৈ-এর মধ্যে তিনি এক কোণায় সোফায় পা উঠিয়ে বসে। আছেন। মনে হল তার শীত করছে, কেমন গুটিমুটি মেরে বসা। আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম, খালু সাহেব কেমন আছেন?